ভাবসম্প্রসারণ” পুষ্প আপনার জন্য ফোটে না
মূলভাবঃ সমাজের বৃহত্তর কল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করার মধ্যেই মানব জীবনের সাফল্য নিহিত। ফুলের সফলতা যেমন আত্মত্যাগে, তেমনি পরের কল্যাণে নিবেদিত প্রাণ হওয়ার মাধ্যমেই ব্যক্তিগত জীবনের সফলতা নিহিত । পরেরকে দান করার মধ্যে রয়েছে পরম সুখ, অবর্ণনীয় আনন্দ এবং সীমাহীন তৃপ্তি।
সম্প্রসারিত ভাবঃ ফুল মানব জীবনের প্রতিচ্ছবি। সৌন্দর্যে ও গন্ধে ফুল অতুলনীয়। বনে বা বাগানে যেখানেই ফুল ফুটে না কেন, নিজের জন্য ফুল ফোটে না। তার ফুল জীবনের সাফল্য তার সৌন্দর্য এবং সুবাস অন্যদের সাথে ভাগ করে নেওয়ার মধ্যে নিহিত। পবিত্রতার প্রতীক হিসেবে দেবতার চরণে ফুল নিবেদন করা হয়। ফুলের সৌরভ ও সৌন্দর্য তার নিজের হলেও ফুল সবার সামনে নিজেকে প্রকাশ করলেই জীবনে সফলতা পায়। মানুষের জীবন অনেকটা ফুলের মতো। জীবন যেন ফুলের মতো সুন্দর, সুগন্ধি, পবিত্র ও পবিত্র হয়। ফুলের মতো পরের জন্য উৎসর্গ করা উচিত, সমাজের স্বার্থে। মানুষের অস্তিত্ব সামাজিক জীবনের আশ্রয়ে। তাই সমাজের প্রতি মানুষের অনেক দায়িত্ব রয়েছে। মানুষ তখনই সংকীর্ণ ও স্বার্থপর হয় যখন সে তার সামাজিক দায়িত্ব ও কর্তব্য ভুলে যায় এবং নিজের আনন্দে মত্ত হয়। পরের কল্যাণে আত্মত্যাগের ব্রত অনেক সুখ। সেবা ও মমত্ববোধ নিয়ে সমাজে যারা দুঃখী মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে এবং দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পারে তবেই মানুষের জীবন সফল হয়। তাই মানুষের জীবনের মূলমন্ত্র হওয়া উচিত: সকলে আমারা সকলের তরে প্রত্যেকে আমরা পরের তরে । ‘যেদিন সমস্ত মানুষ ফুলের আদর্শ দেখতে পাবে এবং অন্যের কল্যাণে তাদের জীবন ব্যয় করতে সক্ষম হবে, সে দিন হবে সামাজিক জীবন, দুঃখ, দুর্ভোগ ও অসাম্যের অবসান। মানুষের জীবন হয়ে উঠবে আনন্দময় ও মঙ্গলময়।
মন্তব্যঃ ফুলের সাফল্য আত্মত্যাগে, ব্যক্তিজীবনের সফলতাও অন্যের সার্বিক কল্যাণ ও মঙ্গল কামনায়। যেদিন আমরা ফুলকে আদর্শ মনে করে অন্যের কল্যাণে জীবন কাটিয়ে দিতে পারব, সেদিন আমাদের সামাজিক জীবনে দুঃখ, বেদনা ও অসাম্যের অবসান হবে। মানুষের জীবন হয়ে উঠবে আনন্দময় ও মঙ্গলময়
![পুষ্প আপনার জন্য ফোটে না](https://nobobohni.com/wp-content/uploads/2022/02/ভাবসম্প্রসারণ-পুষ্প-আপনার-জন্য-ফোটে-না-300x168.png)
আরো পড়তে পারেন শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড; ভাবসম্প্রসারণ(২টি)
ভাবসম্প্রসারণ;লেখার নিয়ম;পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি
ভাবসম্প্রসারণ” পুষ্প আপনার জন্য ফোটে না
মূলভাবঃ মানুষ পৃথিবীতে আসেনি শুধু নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকার জন্য। নিরঙ্কুশ সাফল্য ও মঙ্গল নিহিত রয়েছে সমাজের অন্যদের ভালো করার উপায়। স্বার্থপর চিন্তা মানুষকে কখনো মহান করে না
প্রসারিত ভাবঃ ফুল সৌন্দর্য ও পবিত্রতার প্রতীক। তাই সবাই ফুল ভালোবাসে। তিনি কখনই তার সৌন্দর্য এবং সুবাস নিজের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখেন না, তবে অন্যদের সাথে ভাগ করে এটি উপভোগ করেন। এটাই ফুলের ধর্ম। ফুল প্রাকৃতিক নিয়মের ফল। ফল থেকে বীজ হয়। বীজ থেকে গাছ হয়। গাছে আবার ফল ধরে। তাই আমরা ফুলকে বীজের উত্তরসূরি হিসেবে চিহ্নিত করি। তবে ফুল শুধু বীজের উত্তরসূরিই নয়, তার মিষ্টি সুবাসে সবাইকে মুগ্ধ করে। প্রস্ফুটিত ফুল তার সৌন্দর্যে মানুষকে আনন্দ দেয়। এমনকি যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় ফুলের সুবাস গ্রহণ করে না, বাতাসের মাধ্যমে ফুল তার সুগন্ধ সেই ব্যক্তির নাকে পৌঁছে দেয়। এটি তার জীবন শেষ করেছিল, কিন্তু তার পুষ্প সফল হয়েছিল। মানুষের জীবনকেও ফুলের সাথে তুলনা করা যায়। ফুলের আদর্শ অবলম্বন করে মানুষও যদি অন্যের কল্যাণে তার সমস্ত সম্পদ বিসর্জন দিতে পারে তবে তার জীবন সফল ও সুন্দর হয়।
প্রকৃতপক্ষে সাধক ও মহামানবগণ নানা বাধা-বিপত্তি ও বিপদের মধ্যেও মানবকল্যাণে নিজেদের নিয়োজিত রাখেন। কোনো প্রতিকূল পরিবেশ তাদের মানবকল্যাণে বাধা দিতে পারবে না। ফুলের সুবাসের মতো তাদের মহৎ গুণও সাধারণ মানুষকে পরম আনন্দ ও তৃপ্তি দেয়। হজরত মুহাম্মদ (সা.), হজরত আবু বকর (সা.), হাজি মুহাম্মদ মুহসিন, দানবীর কার্নেগি, রন্দা প্রসাদ সাহার মতো মহান ব্যক্তিদের জীবনী পর্যালোচনা করে আমরা এই পরম সত্যটি উপলব্ধি করতে পারি। তাই আমাদের প্রত্যেকের উচিত বিশ্ব-মানবতার কল্যাণে ফুলের মতো নিজেকে নিয়োজিত করা। এই দেবার মাঝেই নিহিত রয়েছে মানব জীবনের পরম প্রাপ্তি ও চূড়ান্ত সাফল্য। যে ব্যক্তি আত্মকেন্দ্রিক এবং নিজের স্বার্থে যে কোনো অপকর্ম করতে দ্বিধাবোধ করে না সে দেশ ও জাতির জন্য অভিশাপ।
আমাদের সাথে যুক্ত হতে লাইক দিন নববহ্নি পেজ এ