রাশিয়া Russia ; সোভিয়েত ইউনিয়ন এর পতন ও রাশিয়া ইউক্রেন সহ ১৫ টি নতুন রাষ্ট্রের সূচনা Russia Ukraine

সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন ও ১৫ নতুন রাষ্ট্র Russia Ukraine

রাশিয়া Russia Ukraine
১৯১৭ সালে ভ্লাদিমির ইলিচ লেলিনের বলশেভিক পার্টির নেতৃত্বে কমিউনিস্ট বিপ্লবের; মাধ্যমে দুইশত বছরের রুশ সাম্রাজ্যের পতন ঘটে। এর পরের তিন বছর ১৯১৮-২০ গৃহযুদ্ধের কবলে পরে সোভিয়েত ঐকতন্র এবং অস্থিতিশীল সময় পার করে অঞ্চলটি ।

১৯২২ সালে এক চুক্তির মাধ্যমে রাশিয়ার  কমিউনিস্ট পার্টির প্রধান ভ্লাদিমির ইলিচ লেলিন সোভিয়েত ইউনিয়ন গঠন করেন ।

রাশিয়া Russia ; রুশ সাম্রাজ্য Ukraine

সোভিয়েত ইউনিয়ন মূলত রাশিয়া, ইউক্রেন, বেলারুশ এবং ট্রান্স ককেশিয়ান অঞ্চলগুলো যুক্ত ছিল, যার সাথে ১৯২৪ সালে তুর্কমান ও উজবেকরাও যোগ দেয়। পরবর্তীতে ১৯২৯ সালে তাজিক সোভিয়েত সোশ্যালিস্ট রিপাবলিক এবং ১৯৩২ সালে কিরিগ ও কাজাখ সোভিয়েত সোশ্যালিস্টরাও সোভিয়েত ইউনিয়নে যোগ দেয়।১৯৪০ সালে লাটভিয়ান, লিথুনিয়ান, এস্তোনিয়ান, মালদোভাসহ বাল্টিক সাগর পাড়ের আরও কিছু অংশ সোভিয়েত ইউনিয়নে যুক্ত হয়। 

সোভিয়েত ইউনিয়ন গঠনের মূল লক্ষ্য ছিল সমাজতান্ত্র প্রতিষ্ঠা করা।
এর মাধ্যমে বিশ্ব পুঁজিবাদী গোষ্ঠী এবং সমাজতান্ত্রিক দুই গোষ্ঠীতে ভাগ হয়ে যায় ।

১৯২৪ সালে লেলিনের মৃত্যুর পর ক্ষমতায় আসেন জোসেফ ভিসারিওনোভিক স্তালিন । মৃত্যুর পূর্বপর্যন্ত অর্থাৎ ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত স্তালিন ক্ষমতায় ছিলেন । স্তালিন ভগ্ন অনুন্নত কৃষিভিত্তিক একটি দেশকে  পৃথিবীর বুকে শিল্পে উন্নত ও সামরিক এক পরাশক্তিতে রূপান্তরিত করেন । তিনি তার নীতিতে অনঢ় ছিলেন এবং সমাজতন্ত্রের বিরোধিতা করার জন্য তিনি ৬০০০০ নিজ জনগনকে হত্যা করেন । স্তালিনের হাত ধরেই মূলত রাশিয়া পৃথিবীর বুকে এক অপ্রতিরোধ্য শক্তিতে পরিণত হয় ।

আরো পড়তে পারেন নীল নদ দক্ষিণ থেকে উত্তরে

খারাপ অর্থনীতি এবং হতাশা ইউএসএসআর এর প্রান্তীয় প্রজাতন্ত্রগুলিতে স্বাধীনতার; আন্দোলনকে অনুপ্রাণিত করে তোলে। ক্রমান্বয়ে বাল্টিক রাজ্যগুলি ( এস্তোনিয়া , লিথুয়ানিয়া ও লাতভিয়া) মস্কো থেকে তাদের স্বাধীনতা ঘোষণা করা শুরু করে

১৯৮৫ সালে মিখাইল গর্বাচেভ ক্ষমতায় আসেন । এই সময়টা ইউএসএসআর  চরম প্রতিকূল পরিস্থিতিতে পর্যবেশিত হয় । একদিকে রেড বোনাপার্টিজম শুরু হয় আর অন্যদিকে সামরিক বিভাগে জাতীয় আয়ের ত্রিশ শতাংশ খরচ করার কারনে অর্থনীতির নাজুক অবস্থার সৃষ্টি হয় আবার গর্ভাচেভ এর গ্লাসনস্ত ও পেরেস্ত্রোইকা নীতি সংযোজনের কারনে কমিউনিস্টরা নির্বাচনে হারতে থাকে । এভাবে সোভিয়েত ইউনিয়ন পরিসমাপ্তির দিকে এগোতে থাকে ।

. ইউক্রেন Ukraine ..

লাইন অফ কন্ট্রোল (Line of control)
লাইন অফ কন্ট্রোল (Line of control)

১৯৯১ সালে বরিস ইয়েলৎসিনের নেতৃত্বে  বিরোধীগোষ্ঠীর কাছে হার মেনে গর্ভাচেভ ইস্তফা দেন এবং অঙ্গরাষ্ট্রগুলো স্বাধীনতা ঘোষনা করে সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যেতে থাকে আর পরিসমাপ্তি ঘটে ইউনিয়ন অব সোভিয়েত সোসালিস্ট রিপাবলিক এর । ১৮ আগস্ট ১৯৯১ সালে সামরিক এবং সরকারের কমিউনিস্ট পার্টির সংশ্লিষ্ট সদস্যরা গরবাচেভকে গৃহবন্দী করে । তার কারাদণ্ডের জন্য সরকারী কারণটি ছিল স্বাস্থ্যগত কারণে তার অক্ষমতা যার কারনে রাষ্ট্রপতি হিসাবে নেতৃত্ব দিতে না পারা। যদিও জনসাধারণজানত কিন্তু অভ্যুত্থানের নেতারা জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে । ইউক্রেন Ukraine

সামরিক বাহিনী মস্কোর দিকে অগ্রসর হয়েছিল কিন্তু তাদের ট্যাঙ্কগুলি মানব ব্যারিকেড এর সামনাসামনি হয় যারা রাশিয়ান পার্লামেন্টের সুরক্ষার জন্য ব্যারিকেড নির্মাণ করেছিল । বরিস ইয়েলস্টিন তখন পার্লামেন্টের চেয়ারপার্সন ছিলেন । আশেপাশের জনতাকে সমাবেশ করার জন্য তিনি সেই ট্যাঙ্কগুলির মধ্যে একটিতে দাঁড়িয়েছিলেন । যার ফলশ্রুতিতে অভ্যুত্থান তিন দিন পর ব্যর্থ হয়ে যায়।

৪ ই ডিসেম্বর মুক্তিপ্রাপ্ত গর্বাচেভ মিনস্ক এ যান সেখানে তিনি ইউক্রেন ও বেলারুশ প্রজাতন্ত্রের নেতাদের সঙ্গে দেখা করেন এবং একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন যার ফলে দুটি দেশ ইউএসএসআর থেকে সরে যায় এবং স্বাধীন রাষ্ট্র তৈরি করে । মিনস্ক চুক্তি অনুযায়ী বলা হয় ভূরাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক বিষয় হিসেবে সোভিয়েত ইউনিয়ন আর অস্তিত্ব নেই । এর কিছুদিন পরেই বেলারুশ ও ইউক্রেনের পরে আর বাকি নয়টি প্রজাতন্ত্রের আটজনেই কাজাখস্তানের আলমা-আতাতে বৈঠকের পর ইউএসএসআর থেকে তাদের স্বাধীনতা ঘোষণা করে । তার দুই বছর পরে জর্জিয়াও স্বাধীনতার ঘোষণা দেয়।

গর্ভাচেভ যখন মস্কোতে ফিরে আসে তখন পরিস্থিতি এমন ছিল যে গর্বাচেভের মতো তারকা ঝরে পড়ছিল এবং আরেকজন নতুন তারকার উত্থান ঘটতেছিল। তিনি হলেন বরিস ইয়েলস্টিন যিনি সংসদের সামনে ট্যাঙ্কের উপরে দাঁড়িয়ে ছিলেন এবং জনগনকে নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং তিনি পার্লামেন্ট এবং কেজিবি উভয়ের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিলেন। যার কারনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে গর্বাচেভের পদত্যাগ করা অনিবার্য হয়েছিল । ১৯৯১ সালের বড়দিনে তিনি তার অফিস ছেড়ে দেন এবং বলেন ” আমরা এখন একটি নতুন বিশ্বে বাস করছি । শীতল যুদ্ধ ও অস্ত্রের প্রতিযোগিতার পাশাপাশি দেশের উন্মাদ সামরিকীকরণের অবসান ঘটেছে যা আমাদের অর্থনীতি জনসাধারণের মনোভাব এবং নৈতিকতাকে পঙ্গু করে দিয়েছে। ”

চলুন দেখে নেয়া যাক,সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের মধ্য দিয়ে উৎপত্তি হওয়া ১৫ টি স্বাধীন রাষ্ট্রের
1. রাশিয়া Russia
2. জর্জিয়া Georgia,
3. ইউক্রেন Ukraine,
4. মোল্দোভা Moldova,
5. বেলারুশ Belarus,
6. আর্মেনিয়া Armenia,
7. আজারবাইজান Azerbaijan,
8. কাজাখস্তান Kazakhstan,
9. উজবেকিস্তান Uzbekistan,
10. তুর্কমেনিস্তান Turkmenistan,
11. কিরগিস্তান Kyrgyzstan,
12. তাজিকিস্তান Tajikistan,
13. এস্তোনিয়া Estonia,
14. লাটভিয়া Latvia,
15. লিথুয়ানিয়া Lithuania

Azerbaijan, Belarus, China, Estonia, Finland, Georgia ,Kazakhstan, North Korea, Latvia, Lithuania, Mongolia, Norway, Poland, and Ukraine Uzbekistan, Armenia, Azerbaijan, Kazakhstan, Kyrgyzstan, Moldova, Turkmenistan, Tajikistan
আমাদের ফলো করতে পারেন নববহ্নি পেজ এ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *