শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা আমাদের জন্য নিরাপদ নয়,শংকার

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখাই যদি হয় করোনা সংক্রমণ রোধের একমাত্র উপায় তাহলে গত এক বছর এর অধিক সময় ধরে প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকাতে করোনা সংক্রমণ পুরোপুরি নিয়ন্ত্রিত।কিন্তু আসলেই কি তাই?

করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে একবছরের বেশি সময় ধরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায়; শিক্ষার্থীদের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বলে মনে করছেন শিক্ষার্থী,অবিভাক ও বিশ্লেষকগন।শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার ক্ষতি বহুমাত্রিক। শিক্ষক ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী পড়াশোনা ভূলে যাচ্ছে, বড় ঘাটতি নিয়ে উপরের ক্লাসে উঠছে এছাড়াও তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে,, ঝরে পড়া বাড়ছে। কিশোরীদের অনেকেই বাল্যবিয়ের শিকার হচ্ছে। উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা সেশনজটে পড়ে কর্মজীবনে প্রবেশ পিছিয়ে যাচ্ছে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ; মানসিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব

মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, দীর্ঘসময় স্কুলের বাইরে থাকার কারণে অনেক শিশুর মধ্যেই আচরণগত নেতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। তারা বলছেন এমন পরিস্থিতি একদিকে যেমন মানসিক বিকাশে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে অন্যদিকে নিয়মতান্ত্রিক জীবনে অনভ্যস্ত হওয়ার প্রবনতা তৈরি করতে পারে; শিশুদের মধ্যে।শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিভিন্ন গবেষনা ও রিপোর্ট থেকে পাওয়া মানসিক পরিবর্তন গুলোর মধ্যে কিছু প্রধান পরিবর্তন উল্লেখ করা হলোঃ
১.মোবাইল এবং ইন্টারনেটের প্রতি প্রবল আসক্ততা বাড়ছে।
২.প্রচন্ড জেদ, ইমোশনাল রিয়্যাকশন, কান্নাকাটিও করছে কেউ কেউ।
৩.বয়সে কিছুটা বড় বা কিশোরদের মধ্যে ভিন্ন প্রতিক্রিয়া যেমনঃ পরিবারের অন্যদের সাথে দূরত্ব সৃষ্টি করছে,আইসোলেটেড হয়ে আছে তারা একা একা বন্ধ রুমেই বেশি সময় কাটাচ্ছে।
৪.কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের একটা বড় অংশ নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।
৫.স্মরনশক্তি লোপের মতো ভয়াবহতার শিকার হচ্ছে অধিকাংশ জনই।

আরো পড়তে পারেন উত্তরাঞ্চলের শিক্ষাব্যবস্থা র উত্তরণে প্রতিবন্ধকতা ; উত্তরের আমেরিকা

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ; শারীরিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব

শিশু কিশোর ও তরুণ চরিত্রের একটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো তারা চঞ্চল প্রকৃতির।শারীরিক সক্ষমতা বা ফিজিক্যাল ফিটনেস হলো সুস্থতা ও ভালো থাকার একটি অবস্থা। আরো স্পষ্ট ভাবে বললে এটি হলো বিভিন্ন প্রকার খেলাধুলা, পেশা ও দৈনন্দিন কাজ কর্ম করার ক্ষমতা।তাদেত নিয়মতান্ত্রিক জীবনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করাতে শিক্ষার্থীদের এ বিকাশগুলো ব্যাহত হচ্ছে।এক্ষেত্রে শারীরিক যেসব সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে শিক্ষার্থীরা তারমধ্যে
১.দীর্ঘদিন গৃহবন্দী থাকাতে শারীরিক ওজন বৃদ্ধি,কর্মদক্ষতা ও চঞ্চলতা হারানো।ফিজিক্যালি আনফিট হয়ে যাওয়া।
২.অতিরিক্ত স্মার্টফোন ও ইন্টারনেট ব্যবহার এর ফলে মাথা ব্যাথা, কানে কম শোনা উপসর্গেও ভূগছে কেউ কেউ।
উল্লেখযোগ্য।

শুধু কি শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাবেই সীমাবদ্ধ রয়েছে? না তা নয়।
এ পরিস্থিতির কারণে অর্থনৈতিক জটিলতারও সম্মুখীন হতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। দফায় দফায় ছুটি বাড়ানোর কারণে অনিশ্চয়তায় পড়ে মেস, হোস্টেল ও বাসা ভাড়া নিয়ে থাকা শিক্ষার্থীদেরকে তাদের সিট টি ধরে রাখতে হচ্ছে,এক্ষেত্রে মাস শেষ যে টাকা গুনতে হয় তা একজন শিক্ষার্থীর জন্য খুবই চাপের।এছাড়াও যারা বেসরকারি অঙ্গন এর শিক্ষার্থী রয়েছেন তাদের প্রতিষ্ঠান বেতন বাবদ মাস শেষে মোটা অংকের টাকা গুনতে হয় এ নিয়ে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীর বেশ উদ্বিগ্ন।আবার পারিবারিক অসচ্ছলতার দায় এড়াতে না পেরে উপার্জন এর হাল হাতে তুলে নিতে হয়েছে অনেক কোমলমতি কৃতি শিক্ষার্থীকে।
কে নিবে শিক্ষার্থীদের জীবনে নেমে আসা এই শংকার দায়?

মোঃ আকতারুজ্জামান আসিফ
শিক্ষার্থী ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং
মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্ট
রংপুর পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট

আমাদের সাথে যুক্ত হতে লাইক দিন নববহ্নি পেজ এ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *